ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ বিশ্বাস করা, স্বীকার করা, ভরসা করা ও নিরাপত্তা প্রদান করা ইত্যাদি। শরীয়তের পরীভাষায় ঈমান বলা হয়, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিয়ে আসা সেসব বিষয়, যা ষ্পষ্টভাবে ও অবধারিতরূপে প্রমাণিত। সেসব বিষয় মনে প্রাণে মেনে নেয়া। দিলে দিলে বিশ্বাস স্থাপন করার পর মুখে তা স্বীকার করা এবং কুরআন-হাদীস ও ইজমায়ে উম্মত অনুসারে আমল করা। সংক্ষেপে ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসসমূহকেও ঈমান বলে। ঈমানের মর্ম হল, আল্লাহ তা’য়ালার অহীসমূহের উপর পুরোপুরি একীন ও আস্থা রাখা। অর্থ্যাৎ হৃদয়ের গভীরে নিদ্বিধায় এ বিশ্বাস করা, একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালাই অনন্ত অসীম ক্ষমতার অধিকারী। তিনি দুনিয়ার যে কোন জিনিসের মধ্যে নিজের ইচ্ছায় যে কোন গুণ, বৈশিষ্ঠ্য ও ক্রিয়া দিয়ে রাখতে পারেন। আবার যে কোন সময় তা রহিত করতে পারেন।
ঈমানের দাবী হলো, নিজকে আল্লাহ তা’য়ালা ও তাঁর রাসুল (সাঃ) এর কাছে সমর্পন করা, ওয়াদাবদ্ধ হওয়া যে, এখন থেকে আর আমার নিজের কোন ইচ্ছা চলবে না। এখন থেকে আল্লাহ তা’য়ালার আজ্ঞাধীন হয়ে জীবন-যাপন করবো। কিভাবে জীবন যাপন করতে হবে, ইবাদত বন্দেগী করতে হবে, মানুষের সঙ্গে আচার-ব্যবহার ও লেনদেন কিভাবে চলবে, আখলাক-চরিত্র কেমন হবে ইত্যাদি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কে রয়েছে হেদায়াত ও দিকনির্দেশনা এবং তা সবই এ কালেমার অওতাভূক্ত।
অনেকের ধারণা, মুসলমানের ঘরে জস্মগ্রহণ করলেই মুসলমান হওয়া যায়, নিজের কিছু করার দরকার নেই। কিছু না করে শুধু মুসলমান নাম ধারণ করলেই বেহেশতে যাওয়া যাবে-এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা, ঈমান ও ইসলাম কারো পৈতৃক সম্পত্তি হয়। ঈমান ও ইসলাম কতোগুলো কাজের সমষ্টির নাম। সেগুলোর কিছু দিল বা অন্তঃকরণ দ্বারা, কিছু আবার যবান দ্বারা আর কিছু শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এর দ্বারা সম্পন্ন করতে হয়। বড় বড় ইমাম গণ গভির গবেষনার মাধ্যমে কুরআন-হাদীন থেকে ঈমান ও ইসলামে সম্পর্কিত সে সমস্ত কাজের সংখ্যা নির্ণয় করেছেন এবং কোন অঙ্গের দ্বারা কতগুলো কাজ সমাধা হয়, তাও নির্ধারণ করেছেন। কাজ গুলো মোট ৭৭টি। এগুলোকে ঈমানের শাখা বলা হয়। তাহলে ঈমানের শাথা সর্বমোট ৭৭টি।
কোন অঙ্গের দ্বারা কতটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়ে-
-> দিলের দ্বারা সম্পন্ন হয় ৩০ টি।
-> যবানের দ্বারা ৭টি।
-> হাত-পা ও বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এর দ্বারা ৪০টি।
Comments 0