Question:৩. বিজ্ঞান ক্লাশে শিক্ষক ‘সংবেদি অঙ্গ’ অধ্যায়টি পড়াতে গিয়ে বোর্ডে ৩টি সংবেদি অঙ্গ অঙ্কন করে তাদেরকে A , B ও C দ্বারা চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রত্যেকটির ১টি করে প্রধান কাজ নিম্নলিখিতভাবে উল্লেখ করেছিলেন- A: স্বাদ গ্রহণে সাহায্য করে। B: দেখতে সাহায্য করে। C: ঘ্রান নিতে সাহায্য করে। ক. ত্বক কী? খ. জিহ্বার মাঝখান দিয়ে আমরা কোনো জিনিসের স্বাদ অনুভব করি না কেন? গ. A চিহ্নিত সংবেদি অঙ্গটির কাজ উল্লেখ কর। ঘ. C চিহ্নিত সংবেদি অঙ্গ কীভাবে তার প্রধান কাজটি সম্পন্ন করে- বিশ্লেষন কর।
Answer
ক. ত্বক হচ্ছে প্রাণিদেহের সর্ববৃহৎ বহি:আবরণ ও সংবেদনশীল অঙ্গ।
খ. জিহ্বার সামনে, পেছনে, পাশে স্বাদ গ্রহণের জন্য বিশেষ স্বাদ কোরক থাকায়
এসব স্থান দিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের স্বাদ অনুভব করে থাকি। কিন্তু জিহ্বার
মাঝখানে কোনো স্বাদ কোরক না থাকায় আমরা এ স্থান দিয়ে কোনো জিনিসের স্বাদ
অনুভব করি না।
গ. A চিহ্নিত সংবেদি অঙ্গটি হলো জিহ্বা। নিচে A তথা জিহ্বার কাজ উল্লেখ করা হলো-
i. খাদ্যের স্বাদ গ্রহন করা।
ii. খাবার গিলতে সাহায্য করা।
iii. খাদ্যবস্তুকে নেড়েচেড়ে দাঁতের নিকট পৌঁছে দেওয়া।
iv. খাদ্যবস্তুকে লালার সঙ্গে মিশাতে সাহায্য করা।
v. জিহ্বা আমাদের কথা বলতে সাহায্য করে।
ঘ. C চিহ্নিত সংবেদি অঙ্গটি হলো নাক। কারন, শিক্ষক এর প্রধান কাজ হিসেবে ঘ্রাণ নেওয়াকে উল্লেখ করেছিলেন।
নাকের অগ্রভাগে দুটি ছিদ্র থাকে। ছিদ্র দুটি নাসাপথে গলবিল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এর পিছনের দিকটা পাতলা আবরণী
ঝিল্লি দ্বারা আবৃত থাকে। একে ঘ্রাণঝিল্লি বলে। এই ঘ্রাণঝিল্লিতে অসংখ্য ঘ্রাণ স্নায়ুকোষ থাকে। গন্ধযুক্ত কোনো বস্তু
হতে নির্গত বায়বীয় রাসায়নিক পদার্থ বায়ূর মাধ্যমে নাকের ছিদ্র দিয়ে নাসাপথে ঘ্রাণ ঝিল্লিতে প্রবেশ করে এবং
ঘ্রাণ স্নায়ু কোষের সংস্পর্শে এসে একে উদ্দীপ্ত করে। এই উদ্দীপনা বহু ঘ্রাণ স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কের ঘ্রাণকেন্দ্রে পৌছায়
এবং তার নির্দেশনায় আমরা ঐ বস্তুর ঘ্রাণ অনুভূতি লাভ করি। এভাবেই C চিহ্নিত সংবেদি অঙ্গটি অর্থাৎ নাক তার প্রধান
কাজ-কোনো বস্তুর ঘ্রাণ নিতে সাহায্য করা কাজটি সম্পন্ন করে।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত শ্রবণ ইন্দ্রিয় হলো কান। কানের সমস্যার কারণে আমরা বধির হয়ে যেতে পারি।
এজন্য এ ইন্দ্রিয়ের ব্যাপারে আমাদের যত্নবান হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো--
i. কান নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কানে ময়লা জমলে কাঠি বা অন্যকোনো শক্ত বস্তু দিয়ে কান খোঁচানো যাবে না।
ii. গোসলের সময় কানে যাতে পানি না ঢোকে সেদিকে সতর্ক
থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে কানে তুলা দিয়ে গোসল করতে হবে।
iii. কানে বাইরের কোন বস্তু বা পোকামাকড় ঢুকলে ডাক্তারের পরামর্শ
নিতে হবে।
iv. উচ্চ শব্দের গান বা মিউজিক শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারন উচ্চ শব্দ কানের জন্য ক্ষতিকর।
জিহ্বা দিয়ে আমরা খাদ্য বস্তুর টক, ঝাল, মিষ্টি, তিতা স্বাদ গ্রহন করে থাকি। এটা আমাদের স্বাদ ইন্দ্রিয়।
মুখ গহ্বরে অবস্থিত লম্বা পেশিবহুল অঙ্গটি হলো জিহ্বা। জিহ্বার উপরে একটি আস্তরণ আছে, এতে বিভিন্ন স্বাদ
গ্রহনের জন্য স্বাদ কোরক থাকে। জিহ্বার সামনে, পেছনে, পাশে স্বাদ গ্রহণের জন্য বিশেষ স্বাদ কোরক থাকায়
অামরা জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে মিষ্টি ও নোনতা, পাশের অংশ দিয়ে লবণ ও টক স্বাদ অনুভব করে থাকি।
জিহ্বার মাঝখানে কোনো স্বাদকোরক থাকে না। স্বাদকোরক না থাকায় আমরা জিহ্বার মাঝখানটায় কোনো
বিশেষ স্বাদ পাই না। এছাড়া জিহ্বার একেবারে পেছনের অংশে বড় আকারের কোরকগুলো তিতা বা তিক্ত
স্বাদ অনুভব করতে সহায়তা করে।
ঘ. উদ্দীপকের অঙ্গটি মুখ গহ্বরে অবস্থিত লম্বা পেশিবহুল অঙ্গ জিহ্বা। এটি আমাদের স্বাদ ইন্দ্রিয়।
খাদ্য পরিপাকের জন্য উক্ত অঙ্গটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এর যত্ন নিতে হলে যা করতে হবে তা হলো-
i. দাঁত ব্রাশ করার সময় নিয়মিত জিহ্বা পরিষ্কার করা।
ii. শিশুদের নিয়মিত জিহ্বা পরিষ্কার করা উচিত। তা না হলে জিহ্বায় ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
iii. অনেক সময় রোগের কারণে জিহ্বার উপর সাদা বা হলদে পর্দা পড়ে। জ্বর হলে সাধারণত এটি হয়।
এই সময় পানিতে লবণ গুলে কুলকুচি করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
iv. শিশুদের জিহ্বা নিয়মিত পরিষ্কার না করলে জিহ্বার উপর দইয়ের মতো দেখতে ছোট ছোট দাগ দেখা যায়।
এটি এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমণ থেকে হয়।
v. মুখ বা জিহ্বায় ঘা হলে অতি তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
এভাবে আমরা জিহ্বার প্রতি যত্নশীল হব।
ক. একটি সংবেদি অঙ্গের নাম লেখ।
খ. অক্ষিগোলক বলতে কী বোঝ?
গ. চিত্রের ‘b’ অংশটির বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকের অঙ্গটির যত্ন নেওয়ার উপায় বিশ্লেষণ কর।